এনজো ফার্নান্দেজ: মেসিভক্ত থেকে সতীর্থ

তখন সবে অভিমানে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন জাদুকরকে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে দুনিয়াজুড়ে অনুরোধের আসরও বসে যায় সঙ্গে সঙ্গেই। স্বপ্নের তারকাকে সিদ্ধান্ত বদলাতে খোলা চিঠি লিখেছিলেন ১৫ বছরের এক কিশোর। সেদিনের সেই কিশোর এখন একুশের টগবগে তরুণ। একসময় যাকে রোল মডেল হিসেবে জপ করতেন, সেই মেসিরই এখন সতীর্থ। তিনি আর কেউ নন, আর্জেন্টিনার নতুন সেনসেশন এনজো ফার্নান্দেজ।

একসময় যাকে রোল মডেল হিসেবে জপ করতেন, সেই মেসিরই এখন সতীর্থ।

একসময় যাকে রোল মডেল হিসেবে জপ করতেন, সেই মেসিরই এখন সতীর্থ।

আর্জেন্টিনা তথা বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির জন্ম রোজারিও। আর সেখান থেকে একটু দূরে, ২০ কিলোমিটারের মতো এগিয়ে গেলেই মফস্বল শহর সান মার্তিন। সেখানে ২০০১ সালে জন্ম এনজো ফার্নান্দেজের।

‘আমরা দুজন একই সঙ্গে আর্জেন্টিনা দলে খেলছি’—কাতার বিশ্বকাপে পা রাখার আগপর্যন্ত এটাই ছিল ফার্নান্দেজের একমাত্র গৌরব। বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেয়ে বেনফিকার এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের সুখের সংজ্ঞাটা কিছুটা পাল্টেছে। তিনি বলতে শুরু করেন, মেসির সঙ্গে বিশ্বকাপ খেলছি, এটাই আমার গর্ব! আর এবার নতুন করে সুখের সংজ্ঞা লিখলেন ফার্নান্দেজ।

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে অঘটনের হারের পর মেক্সিকোর বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে মেসির সঙ্গে একই ম্যাচে গোল করেন। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে মাটি–কামড়ানো এক শটে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি। ৮৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলটি এসেছে ফার্নান্দেজের অসাধারণ বাঁকানো এক শটে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার এই গোলে সহায়তা মেসিরই।

ম্যাচ শেষে ফার্নান্দেজ বলেছিলেন তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার কথা। তিনি বলেন, আমি সব সময়ই এই জার্সি পরে খেলার স্বপ্ন দেখেছি। আজ আমার বিশ্বকাপে একটি গোল করার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি আজ খুব খুশি। এই দলের এটা প্রাপ্য।

অথচ মাত্র তিন বছর আগেও এই মিডফিল্ডারের স্বপ্ন জাতীয় দল পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছিল না কিছুতেই। তখনো তিনি রিভার প্লেটের রিজার্ভ দলের সদস্য, কোনো চুক্তিতেও সই করা হয়ে ওঠেনি।

গত বছরের নভেম্বরে লিওনেল স্ক্যালোনি উরুগুয়ে এবং ব্রাজিলের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য তাকে দলে নিলেও খেলার সুযোগ হয়নি। কাতার বিশ্বকাপের স্বপ্নও ফিকে হতে শুরু করে তাতে। তবে এই বছরের জুনে সেই স্বপ্ন রং ছড়াতে শুরু করে, যখন পর্তুগিজ দল বেনফিকার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক হয়ে যায়, করে ফেলেন গোলও। কাতার বিশ্বকাপেও গোল করলেন, বুলেট গতির শটে ভাঙলেন গুইলারমো ওচোয়ার প্রতিরোধও।

এবার নকআউট ম্যাচেও তার দিকে তাকিয়ে থাকবে দল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*