
জোয়ারে নোনা কান্না’য় ভেসে গেল সব, খুলনার কয়রা উপজেলায় অতিরিক্ত জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন বাঁধের প্রায় ১০টি স্থান
দিয়ে উপচে লোকালয়ে নোনা পানি প্রবেশ করেছে। জোয়ার আসার আগে যাতে লোকালয়ে পানি না ঢুকতে পারে, সে জন্য সড়কের
ভর্তি বস্তা দিয়ে দিনভর পানি আটকানোর চেষ্টা করে স্থানীয়রা। কিন্তু দুপুরের জোয়ারের পানির উচ্চতার কাছে, তা আর টিকতে পারেনি।
দিনভর সেচ্ছাশ্রমে পানি আটকানোর চেষ্টা করেও
জোয়ারে নোনা কান্না’য় ভেসে গেল সব
বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের চাপে চরামুখা গ্রামের রিং বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি
প্রবেশ করে।এক ঘণ্টার মধ্যে নদীর নোনা পানিতে তলিয়ে যায় চারটি গ্রাম।দুপুর ১২টার দিকে মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া এলাকায়
কপোতাক্ষ নদ এবং বেলা দেড়টার দিকে উত্তর বেদকাশী এলাকার শাকবাড়িয়া নদীর ধারে গিয়ে দেখা যায়, উত্তাল নদী,
কোথাও কোথাও বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাঁধের ওপর তাতে মাটির
বাঁধ ভাঙার উপক্রম।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়রা সদরের ৪ নম্বর কয়রা, ঘাটাখালী, মহারাজপুর ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া, সুতিয়া বাজার,
পবনা, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কালীবাড়ি, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের গাজীপাড়া, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটওহারা, গোলখালী
এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করলেও সাধারণ মানুষের চেষ্টায় বাঁধ রক্ষা সম্ভব হয়। তবে ভোর থেকে চেষ্টা
করেও দক্ষিণ বেদকাশীর চরামুখা রিং বাঁধের পানি
আটকাতে পারেনি এলাকাবাসী।কয়রা উপজেলা প্রশাসন বলছে, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত
হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মাছের ঘেরের। অন্তত ৫০০ একর মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের
চেয়ারম্যান মো. আছের আলী বলেন, নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। এতে দক্ষিণ বেদকাশী, চোরামুখা
, বীণাপাণি, পদ্মপুকুর, হলুদবুনিয়া, উত্তর চেরামুখা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
জোয়ারে নোনা কান্না’য় ভেসে গেল সব
কয়রা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সরদার লুৎফর রহমান বলেন, কাশিয়াবাদ স্লুইস গেটের পাশে বেড়িবাঁধ উপচে পানি
করলেও তাৎক্ষণিক এলাকাবাসী কাজ করে পানি প্রবেশ ঠেকাতে পারেনি।কয়রা উপজেলাটি পড়েছে পাউবোর সাতক্ষীরা অঞ্চলের বিভাগ-২-এর
আওতায়। ওই বিভাগের সেকশন কর্মকর্তা মো. মশিউল আবেদীন বলেন, ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের জন্য চেষ্ট চলছে। তবে গত রাতে
জোয়ারের পানি খুব বেশি না বাড়ায় মনে করা হচ্ছিল, এ যাত্রায় হয়তো আল্লাহ রক্ষা করেছেন। কিন্তু সকাল থেকে
নদীতে জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঢেউও খুব বেড়েছে।
Leave a Reply