ফেল করা সেই ১২ জনই পেল জিপিএ ৫

কথার যাদুকর চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত পৈতৃক ভিটা নেত্রকোনার কেন্দুয়া কুতুবপুর গ্রামের শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে এসএসসিতে অংশ নেয়া গণিতে ফেল করা ১৩ শিক্ষার্থীর ১২ জনই পেয়েছে জিপিএ-৫।

ফেল করা সেই ১২ জনই পেল জিপিএ ৫

প্রথমে শিক্ষা বোর্ড থেকে ফেল করার তথ্য এলেও চ্যালেঞ্জের পর শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) পাস করার তথ্য প্রকাশ হওয়ায় আনন্দের জোয়ার বইছে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে।


শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান।


লেখক হুমায়ূন আহমেদের পৈতৃক ভিটা নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাবার নামে শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ। স্বপ্নের স্কুলটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৪৭ জন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জিপিএ ৫ সহ শতভাগ উত্তীর্ণ হয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও বিদ্যালয়টির ৭২ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

নেত্রকোনার সীমান্ত উপজেলা হওয়ায় পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী মহিম চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয় তারা। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় ওই ৭২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ জন জিপিএ ৫ সহ ৫৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এরপর খোঁজ নিয়ে শিক্ষকরা দেখেন, একটি হলে পরীক্ষা দেয়া ১৩ জনের সবাই শুধুমাত্র গণিতে ফেল করেছে। শুধু তাই নয়, একই হলের ওই মহিম চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়েরও ৩৯ জন গণিতে ফেল করে।

বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক অভিভাবকদের মাঝে রহস্যজনক মনে হলে তারা ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেন কেন্দ্র সচিব বরাবর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন পরীক্ষা কেন্দ্রটির সচিব আব্দুল মতিন।

পরবর্তীতে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) শিক্ষা বোর্ড তাদের ওয়েব সাইটে ফেল করা পরীক্ষার্থীদের সংশোধিত ফল প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, হুমায়ূন আহমেদের স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের ফেল করা ১৩ পরীক্ষার্থীর সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে এবং এই ১৩ জনের মধ্যে ১২ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছে।

বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা সবাই মেধাবী। ফল প্রকাশের পর যখন দেখলাম ১৩ জন গণিতে ফেল করেছে, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম যে, কিছু একটা ভুল হয়েছে। যাই হোক, অবশেষে পুনরায় রেজাল্ট পেলাম। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) শিক্ষা বোর্ড তাদের নিজস্ব ‘এডুকেশনাল নিউজ অব বাংলাদেশ’ নামক ওয়েব সাইটে নেত্রকোনার একটি বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জনই জিপিএ-৫ পেয়েছে লিখা দেখে নিশ্চিত হই। আমাদের ৭২ জন পরীক্ষার্থীর সকলেই উত্তীর্ণ এবং ৪৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এখন আমাদের ফলাফল শতভাগ পাস।

এ ধরনের ঘটনায় বিদ্যাপীঠ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ভুল হতেই পারে। অবশেষে সঠিক রেজাল্ট পাওয়া গেছে, এখন এটাই বড় বিষয়।
 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*