
হাজারো মানুষের চেষ্টা বৃথা পানিতে ডুবল ১০ গ্রাম, চারদিকে শুধু পানি আর পানি। হু হু করে কপোতাক্ষ নদের পানি ঢুকছে। নদের পারের
চিংড়ি ঘেরগুলো সাগরে রূপ নিয়েছে। এরপর সেই পানি চলে এসেছে বসতি জনপদে।নদীর পানিতে একেবারেই ডুবন্ত একটি জনপদে পরিণত
হয়েছে খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী।সোমবার (১৫ আগস্ট) ভোর থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের প্রায়
দুই হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে চরামুখা গ্রামের কপোতাক্ষ
হাজারো মানুষের চেষ্টা বৃথা পানিতে ডুবল ১০ গ্রাম
নদের প্রায় ২০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ শেষ করে। কিন্তু বাঁধ নির্মাণ শেষে বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই প্রবল জোয়ারে সেটি ভেঙে আবারও লোকালয়ে
পানি প্রবেশ করে। ডুবে যায় ১০টিরও বেশি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।ইউনিয়নের পদ্মপুকুর গ্রামের তৈয়েব আলী
বলেন, ‘গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ গিয়ে ছয় ঘণ্টা কাজ করে বাঁধ দিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে আবারও ভেঙে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে।
কতবার ভাঙবে আর আমরা কতবার ঠিক করব তা বুঝতে পারছি না। ’
বীণাপাণি গ্রামের গোপাল মিস্ত্রি। চলতি মৌসুমে
ছয় বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। লবণ পানিতে ডুবে গেছে তার ফসল। তিনি বলেন, ‘ধানের আশা-ভরসা শেষ। নদীর জোয়ার-ভাটার
সঙ্গে মিলেমিশে চলছে আমাদের জীবন। ’এলাকাবাসী জানান, এর আগে গত ১৭ জুলাই ভোরে চরামুখার এই বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটারের মতো
ধসে যায়। সে সময় ভাঙা স্থানে রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়। এরপর ১৩ আগস্ট দুপুরে উচ্চ জোয়ারে ওই রিং বাঁধের ৫০ ফুটের মতো
ভেঙে গিয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় কয়েক শ
মানুষের চেষ্টায় তা মেরামত করা হয়। তবে নদীর পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল শতাধিক মাছের ঘের। সেই বাঁধটি গতকাল রবিবার ২০০ মিটারের মতো
ভেঙে যায়।বারবার একই স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতিকেই দুষছে স্থানীয় লোকজন। তাদের দাবি,
এক মাস আগে রিং বাঁধ দেওয়া হলেও সেটি রক্ষণাবেক্ষণ বা মজবুত করার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ।দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওসমান গনি কালের কণ্ঠকে বলেন, বাঁধ ভেঙে আজ পানি ঢুকেছে দক্ষিণ
হাজারো মানুষের চেষ্টা বৃথা পানিতে ডুবল ১০ গ্রাম
বেদকাশী, চরামুখা, হলুদবুনিয়া, বীণাপাণি, পদ্মপুকুরসহ ১০টির বেশি গ্রামে। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকালে আবারও
সবাইকে নিয়ে বাঁধ মেরামতের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় নদীর
পানি অনেক বৃদ্ধি হচ্ছে। এ কারণে দক্ষিণ বেদকাশীর যে বাঁধটি মেরামত করা হচ্ছিল তা আবার ভেঙে যায়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে
সেখানে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছি। স্বেচ্ছাশ্রমে রিং বাঁধ মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। দরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি
উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ।
Leave a Reply